December 22, 2024, 10:41 pm
মোহনপুরে গ্রীষ্মের পেঁয়াজ যেন কৃষকের মুখের নির্মল হাসি আমদানি নির্ভরতা কমাতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ ক্ষেত্রে প্রথমবারেই সফলতার দেখা পেয়েছেন রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কৃষকেরা। উপজেলার ২০০টি প্রদর্শনী প্লটে চাষ করা পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে কৃষি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
দেশের বেশির ভাগ কৃষক শীতকালীন পেঁয়াজ চাষ করেন। ফলে গ্রীষ্মকাল আসতে আসতে পণ্যটির দাম বেড়ে যায়। বিদেশ থেকে আমদানির পরও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। গত কয়েক বছর ধরে এই অবস্থা চলতে থাকায় কৃষি বিভাগ এখন দেশে গ্রীষ্মকালেও পেঁয়াজ চাষের পদক্ষেপ নিয়েছে।
মোহনপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পেঁয়াজ চাষের জন্য বিদেশ থেকে আনা বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে ২০০ জন কৃষককে সরবরাহ করা হয়। সেই সঙ্গে ২০২১-২২ অর্থবছরের কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় জমি চাষ ও সার প্রয়োগসহ সার্বিক বিষয়ে ব্যয় নির্বাহ করতে কৃষকদের ২ হাজার ৮০০ টাকা করে দেওয়া হয়। এরপর চারা রোপণের পর থেকে অন্যান্য সহযোগিতা দিয়ে যায় কৃষি বিভাগ। যাতে করে আলোর মুখতে শুরু করে প্রকল্পটি।
কৃষি বিভাগ জানায়, তারা ভবিষ্যতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ বৃদ্ধি করে আমদানি নির্ভরতা কমাতে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের সার্বিক সহযোগিতায় উৎপাদিত গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আকার, স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিমান অনেক উন্নত।
উপজেলার জাহানাবাদ ইউপি’র কৃষক সবুজ, আব্বাস, আলমগীর বলেন, নাসিক এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষ করেছেন। মাত্র ২ মাস ১০ দিনে এই পেঁয়াজ তোলার উপযোগী হয়েছে। বাজারে দাম বেশ ভালো।’ পেঁয়াজগুলো দেখতে লাল। মাত্র সাতটি পেঁয়াজের ওজন এক কেজি ১৭০ গ্রামের বেশি। বাজারে প্রতি কেজি পাতাসহ পেঁয়াজ ৪০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) উপজেলার নওনগর বিলে সবুজ আলীর খেত পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পরিচালক রাজশাহী অন্চল সামসুল ওয়াদুদ ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রহিমা খাতুন।
কৃষক সবুজ আলী বলেন, ‘এই সময়ে পেঁয়াজ হবে কি না তা নিয়ে ভয় ছিল।তবে স্যারদের সহযোগিতায় ভালো ফলন হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রহিমা খাতুন বলেন, ‘ মোহনপুর উপজেলায় এই পেঁয়াজের চাষ করে আমরাই সবার আগে উত্তোলন করতে পেরেছি। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। পেঁয়াজের আমদানি কমাতে ভবিষ্যতে আরও বেশি পরিমাণ জমিতে এমন পেঁয়াজ চাষ করা হবে।’
ইউএনও সাবিহা ফাতেমাতুজ্ জোহ রা মনে করেন, বাইরে থেকে যাতে আমদানি করা না লাগে সে জন্য গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ খুবই উপযোগী। ভবিষ্যতে এর পরিধি বাড়লে আমদানি নির্ভরতা কমে যাবে।